জুলাই ২৭, ২০২৪

শনিবার ২৭ জুলাই, ২০২৪

ভারত মহাসাগরের তলদেশে বিশাল গর্ত!

Huge hole under the Indian Ocean!
ভারত মহাসাগরের তলদেশে বিশাল গর্ত!। ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রের মেঝেতে অনেকটা এলাকা জুড়ে তার বিস্তৃতি। দীর্ঘ দিন ধরেই এই গর্তটি বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণে গর্তটি তৈরি হয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।

ভারত মহাসাগরের ‘গ্র্যাভিটি হোল’ এর বিস্তৃতি বিশাল। প্রায় ৩০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই গর্তটি তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের সবচেয়ে নিচের স্তরটির চেয়েও এই অঞ্চলটি গভীর। গর্তটিকে ঘিরে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। সমুদ্রের নিচে বিশাল অংশ জুড়ে এই গর্তের কারণে অনেকের ধারণা, সমুদ্রের তলদেশ হয়তো নিচের দিকে বসে যাচ্ছে।

কেন ভারত মহাসাগরের নিচে এই বিশাল গর্ত তৈরি হলো, তার সম্ভাব্য কারণ আবিষ্কার করেছেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী। তারা বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের গবেষক দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ। ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস‌’ জার্নালে দেবাঞ্জন এবং আত্রেয়ীর গবেষণামূলক তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। কেন ভারত মহাসাগরের মাঝে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ তৈরি হলো, তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন তারা।

গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর আকার একটি নিখুঁত গোলকের মতো বলে মনে করা হলেও আসলে পৃথিবী তেমন নয়। পৃথিবীপৃষ্ঠ কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, কোনও অংশ একটু বেশি সমতল। ভারত মহাসাগরে তৈরি ‘গ্র্যাভিটি হোল’ আক্ষরিক অর্থে তেমন ‘গর্ত’ নয়, যা সমুদ্রের পানি কমিয়ে দেয় বা শুষে নেয়। বরং এটি ভূত্বকের একটি অসঙ্গতিপূর্ণ স্থান, যেখানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টান অপেক্ষাকৃত দুর্বল।

ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রস্থলে দুর্বল মাধ্যাকর্ষ টানের কারণ হিসাবে ভূত্বকের নিচে পৃথিবীর ম্যান্টেল স্তরের গলিত ম্যাগমাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই ম্যাগমাই দুই কোটি বছর আগে পৃথিবীর আকৃতি গড়ে দিয়েছিল।

ভূত্বকের নিচ দিয়ে দুই কোটি বছর ধরে বয়ে চলেছে এই তরল তপ্ত ম্যাগমা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ম্যাগমার স্রোত যদি কখনও থমকে যায়, ভারত মহাসাগরের তলদেশে তৈরি হওয়া গর্তটিও মিলিয়ে যাবে।

এ মহাসাগরের তলদেশে গর্তের উপস্থিতি বাইরে থেকে দেখে তা বোঝা অসম্ভব। তবে এ ‘গ্র্যাভিটি হোল’ নিয়ে আরও গবেষণা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও নতুন তথ্য উঠে আসবে।