সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশো অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
‘টু দ্য পয়েন্ট’ নামে এই টক শোতে কথা বলেছেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী।
প্রায় ৪৯ মিনিট পর্বের এই টক শোতে শুরু থেকেই বেশ বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা, উপস্থাপনা, ধৈর্য ও বাচনভঙ্গির কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন নেটিজেনরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন দীপ্তি চৌধুরীকে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ছোট ছোট ক্লিপ। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, কে এই উপস্থাপিকা?
জানা যায়, দীপ্তি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক করছেন। ২০১৬ সালে চ্যানেল আইয়ের ‘স্বর্ণ কিশোরী’ নামের একটি অনুষ্ঠান দিয়ে উপস্থাপনা শুরু তার। এরপর চ্যানেলটির তারকা কথনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে দেখা গেছে। সম্প্রতি বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেদিনের টক শো নিয়ে কথা বলেছেন এই উপস্থাপিকা। যেখানে তিনি বলেছেন, সেদিনের টক শোতে আলাদা কিছু করেননি। মানুষের প্রতি ও পেশার প্রতি দায়বদ্ধতাটুকুই পালন করেছেন।
দীপ্তি গণমাধ্যমকে বলেন, সেদিন আমি আলাদা কিছু করিনি। যখন আমি ওই চেয়ারে বসি, তখন আমার অতিথিকে সম্মান করে জনগণ ও দর্শক যে প্রশ্নটি করতে চায় সেই কাজটিই করেছি। এটাই হয়তো মানুষ ভালোভাবে নিয়েছে। তারা প্রশংসা করছে। তবে আমার মনে হয়, আমি খুব মহান কিছু করিনি।
এদিকে সেদিন সাবেক বিচারপতির সঙ্গে যে বাহাস হলো সেটি প্রসঙ্গে দীপ্তি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাসায় কিংবা অনুষ্ঠানে, যে মানুষটি অতিথি হয়ে আসেন, তিনি আমার জন্য সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে আমি সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করি। এক্ষেত্রে তার আচরণ আমাকে কখনও প্রভাবিত করে না, করেনি। সবসময় চেষ্টা করি আমি যেন নিজের জায়গাতে ঠিক থাকতে পারি। সেদিনও চেষ্টা করেছি। পেরেছি কিনা জানি না।’
নিজেকে ধৈর্যের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সাবেক বিচারপতির চিৎকারের বিপরীতে। মুখের হাসিটুকুও ম্লান হয়নি এতটুকু। সেটির জন্যও আপত্তিকর মন্তব্য শুনতে হয়েছে সাবেক বিচারপতির কাছ থেকে। তবু তিনি হাল ছাড়েননি ভদ্রতার। এ প্রসঙ্গে দীপ্তি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ধৈর্য ধরা মানে কিন্তু আমি বোল্ড বা শক্তিশালী নই, তা কিন্তু প্রমাণ করে না। বরং আমি বিশ্বাস করি, শক্তিশালী কথা নিচু কণ্ঠে বললেও সেটা অনেক শক্তিশালী। আর দুর্বল কথা চিৎকার করে বললেও সেটা দুর্বলই থাকে। এটুকু ভরসা আমার আছে।’
ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে দীপ্তি বলেন, পর্বটি প্রচার হওয়ার পর আমি অনেক ফোনকল পেয়েছি, মেসেজ পেয়েছি। সবার উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সকলের প্রতি ভালোবাসা জানাতে চাই।