জুলাই ২৭, ২০২৪

শনিবার ২৭ জুলাই, ২০২৪

বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক নিয়োগের ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি আসছে

TEACHER
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এ লক্ষ্যে ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংস্থাটি, যা ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এরপর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ ও তা যাচাই শেষে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে সংস্থাটি। 

গত সোমবার এনটিআরসিএর সদস্য মুহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ কর্তৃক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি) শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লক্ষ্যে পঞ্চম নিয়োগ সুপারিশ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে এনটিআরসিএর প্রচলিত নিয়ম অনুসারে সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের শূন্যপদের তথ্য চাহিদা (ই-রিকুইজিশন) অনলাইনে সংগ্রহ করা হবে। অনলাইনে চাহিদা দেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আবশ্যিকভাবে ই-রেজিস্ট্রেশন (অনলাইন নিবন্ধন) কার্যক্রম সম্পাদন করতে

যেসব প্রতিষ্ঠান পূর্বেই ই-রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে, তাদের অবশ্যই ই-রেজিস্ট্রেশন প্রোফাইল হালনাগাদ করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে অনলাইন প্লাটফর্মে ই-রেজিস্ট্রেশন সম্পাদন কিংবা প্রোফাইল হালনাগাদ না করলে অনলাইনে নিয়োগযোগ্য শিক্ষকের শূন্যপদের চাহিদা (ই-রিকুইজিশন) দেওয়া সম্ভব হবে না।

ছবি: সংগৃহীত

যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এর মধ্যে ই-রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ই-রেজিস্টেশন ফর্মের এডিট অপশনে ক্লিক করে প্রতিষ্ঠানের প্রোফাইল হালনাগাদ করতে হবে।

কোনো প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য অপরিবর্তিত থাকলেও ওই প্রতিষ্ঠানকে লগইন করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। নতুবা ই-রেজিস্ট্রেশন নবায়ন বা হালনাগাদ হবে না। এজন্য ২৯ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-রেজিস্ট্রেশন করা এবং আগে ই-রেজিস্ট্রেশন করা প্রতিষ্ঠানের তথ্য হালনাগাদ করার জন্য অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নিজস্ব প্রোফাইলও হালনাগাদ করতে হবে। ই-রেজিস্ট্রেশন প্লাটফর্মে লগইন করার জন্য তাদেরকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড টেলিটক থেকে এমএমএসের মাধ্যমে পাঠানো হবে। ই-রেজিস্ট্রেশন প্ল্যাটফর্মে লগইন করে তথ্য প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে ই-রেজিস্ট্রেশন নামক সেবাবক্সে দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করতে অনুরোধ করা হলো।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সূত্র থেকে জানা যায়, ৬৮ হাজার ৩৯০টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয় এনটিআরসিএ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও কলেজে ৩১ হাজার ৫০৮টি এবং মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ হাজার ৮৮২টি শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। সব কটি পদই এমপিওভুক্ত।

গত বছরের ১২ মার্চ প্রায় ৩৬ হাজার পদ শূন্য রেখে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে তিন হাজার ৬০৭ জন পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ভিআর ফরম দাখিল করেননি। তা ছাড়া অবশিষ্ট এক হাজার ৭৯৯ জনের জাল সনদ পাওয়ায়, কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায়, বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করায়, নিবন্ধন সনদ না থাকা সত্ত্বেও ভুল পদে আবেদন করায়, মামলার স্থগিতাদেশ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে নিয়োগের সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।

গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের মধ্য থেকে ২৭ হাজার ৭৪ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে কলেজ ও স্কুলে ১৩ হাজার ৭০৫, মাদরাসায় ১১ হাজার ২৭৯, কারিগরিতে ৫১৬, সংযুক্ত স্কুলে এক হাজার ৫৮৩, সংযুক্ত মাদরাসায় ৬২১ জন। সেই সুপারিশ প্রকাশের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ।

যদিও চূড়ান্ত সুপারিশকৃতদের মধ্য থেকেও অনেকেই যোগদান করেননি। সেই সংখ্যাও তিন-চার হাজারের কম হবে না। ফলে আগেই শূন্য থাকা প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের মধ্যে গত দেড় বছরে শূন্য হওয়া আরো প্রায় ২০ হাজার পদ যুক্ত হয়েছে। এ হিসেবে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষক পদ এখন শূন্য।