জুলাই ২৭, ২০২৪

শনিবার ২৭ জুলাই, ২০২৪

জুলাইয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ–ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য

ডলার সংকটের সমাধানে বিকল্প মুদ্রার দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের অনেক দেশ। এই অবস্থায় বাংলাদেশ ও প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেনে বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাই থেকে রুপিতে আমদানি দায় পরিশোধ করা যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জুলাইয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ–ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য। ছবি: সংগৃহীত

ডলার সংকটের সমাধানে বিকল্প মুদ্রার দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের অনেক দেশ। এই অবস্থায় বাংলাদেশ ও প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেনে বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাই থেকে রুপিতে আমদানি দায় পরিশোধ করা যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

বাংলাদেশ ব্যাংকও ইতিমধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের ইস্টার্ণ ব্যাংককে রুপির মাধ্যমে লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারতের সঙ্গে রুপি ও টাকায় বিনিময় হওয়ার সুযোগ আপাতত নেই। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ২০২২ সালের ১১ জুলাইয়ের সার্কুলার শর্তের আলোকে সোনালী ও ইস্টার্ণ ব্যাংককে ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) ও আইসিআইসিআই ব্যাংকে হিসাব খুলতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব হিসাবের মাধ্যমে শুধু রুপিতে লেনদেন করা যাবে, যা জুলাই নাগাদ বাস্তবায়নে কাজ চলছে।

অপরদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লেনদেনের শর্তের আলোকে সোনালী ও ইস্টার্ণ ব্যাংক এবং ভারতের এসবিআই ও আইসিআইসিআই ব্যাংক পারস্পরিক হিসাব খোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে গত মাসে আরবিআই ও এসবিআইয়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম ও ইস্টার্ণ ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখারের সঙ্গে বৈঠকও করে গেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই লেনদেন বাংলাদেশের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না বরং ভারতের মুদ্রা শক্তিশালী হবে। অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডলার সংকট সমাধানে ভারতের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। রুপি কোনো আন্তর্জাতিক মুদ্রা নয়।

তিনি বলেন, এই চুক্তি বাংলাদেশের জন্য বড় কোনো সুবিধা তৈরি করবে এমন কোনো যুক্তি দেখি না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক। ডলারের আধিপত্য থেকে চীনের মতো বেরিয়ে এসে নিজেদের মুদ্রার ব্যবহার করে আঞ্চলিক শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে ভারত।

আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভারতের ব্যাংক থেকে রুপিতে ঋণ নিয়ে আমদানি ব্যয় পরিশোধ আমাদের জন্য বোঝা হবে। একটা পর্যায়ে টাকার বিপরীতে রুপির দর বাড়িয়ে দেবে।’

উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে দেশে মার্কিন ডলার নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক দেশই ডলারের পাশাপাশি বিকল্প মুদ্রা খোঁজা শুরু করে। এ সময়ে বাংলাদেশেও ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট উত্তরণে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতের সঙ্গে বিকল্প মুদ্রায় বাণিজ্য শুরু করতে যাচ্ছে দুই দেশ।