
বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।
প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ, ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো লিটন দাসের দল। এটিই বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস, কারণ এই প্রথম বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো। এর আগে ২০১৫ সালে একমাত্র ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল টাইগাররা।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে-তে মাত্র ২৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। তানজিদ হাসানের জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া ওপেনার মোহাম্মদ নাইম (৩ রান), অধিনায়ক লিটন দাস (৮ রান), তাওহিদ হৃদয় (০ রান) এবং পারভেজ হোসেন ইমন (১৩ রান) দ্রুত ফিরে যান।
এমন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেন জাকের আলি ও মাহেদি হাসান। তবে ২৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। এরপর ক্রিজে জাকের একাই লড়াই চালিয়ে যান। বাকিরা শুধু যাওয়া-আসার মধ্যেই ছিলেন।
শামিম ফিরে যান ১ রান করে। তানজিম সাকিব এবং রিশাদ ফেরেন যথাক্রমে ৭ ও ৮ রানে। শরিফুল শেষ ওভারে রান আউট হন। মোস্তাফিজ থাকেন ০ রানে অপারিজত। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে পাঁচটি ৬ ও এক চারের সাহায্যে করেন ৫৫ রান।
অন্যদিকে পাকিস্তানের হয়ে বোলিংয়ে ২ উইকেট করে পেয়েছেন সালমান মির্জা ও আহমেদ দানিয়াল।
১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলেই দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে উইকেট হারায় পাকিস্তান। পারভেজ ইমন ডিপ পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে বল থামান, রিশাদ হোসেন করে থ্রো। স্টাম্প ভাঙেন লিটন। সাইম আইয়ুব ফেরেন ১ করে। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত সুইংয়ে গোল্ডেন ডাকে এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ হারিস। ফখর জামানও শরিফুলের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি ৮ বলে ৮ রানে।
পঞ্চম ওভারে টানা দুইটি বলে দুর্দান্ত বাউন্সারে ব্যাটারদের পরাস্ত করেন তানজিম সাকিব। হাসান নেওয়াজ আর মোহাম্মদ নওয়াজ-দুই ব্যাটারই উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ০ রানে। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বলতে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। ১৮ বলে ১৩ রান করে শেখ মেহেদীর বলে আউট হন খুশদিল।
শেষদিক আব্বাস আফ্রিদি আর ফাহিম আশরাফের ব্যাটে আশা দেখছিল পাকিস্তান। ১৩ বলে ১৯ করা আব্বাসকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তবে ফাহিম আশরাফ দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার প্রতিরোধ ভাঙেন রিশাদ। ৩২ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ফাহিম করেন ৫১।
অন্য প্রান্তে থাকা আহমেদ দানিয়েল তখনও ব্যাট চালাচ্ছিলেন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তাদের হাতে ছিল এক উইকেট। মুস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন দানিয়েল। পরের বলেও উড়িয়ে মেরেছিলেন এই ব্যাটার, তবে এবার বল যায় সরাসরি মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা শামীমের হাতে। তাতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
আগামী ২৪শে জুলাই মিরপুরেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল।