
২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০৩০ সালের এক্সপোসহ আসন্ন বৃহৎ আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোর প্রস্তুতি হিসেবে সৌদি আরব এবার দীর্ঘদিনের মদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদেশি দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে ২০২৬ সালের মধ্যে দেশটির ৬০০টি পর্যটন স্থানে মদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এই পদক্ষেপ দেশটির পর্যটন শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্য সানের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরব তাদের ‘অতিরক্ষণশীল’ ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলে পাঁচতারা হোটেল, বিলাসবহুল রিসোর্ট এবং প্রবাসীবান্ধব কম্পাউন্ডসহ লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানগুলোতে ওয়াইন, বিয়ার ও সাইডার বিক্রির অনুমতি দেবে। তবে জনসমাগমপূর্ণ স্থান, ব্যক্তিগত বাড়ি, দোকান এবং ফ্যান জোনগুলোতে মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকবে। এই যুগান্তকারী নীতিগত পরিবর্তন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন-২০৩০’-এর একটি অংশ, যার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক পর্যটন বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং দেশের ‘টিটোটাল ভাবমূর্তি’ পরিবর্তন করা।
কর্তৃপক্ষ আশা করছে, নিওম, সিন্দালাহ দ্বীপ এবং লোহিত সাগর প্রকল্পের মতো জমকালো পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিয়ন্ত্রিত অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সৌদি আরবকে সুবিধা দেবে। এই দেশগুলোতে পর্যটন অঞ্চলে মদ্যপান ইতিমধ্যেই বৈধ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানগুলো কঠোর ‘নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার’ অধীনে পরিচালিত হবে। অপব্যবহার রোধ এবং দেশের ইসলামী মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী এবং কঠোর নিয়মকানুন থাকবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হলো নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচয় বজায় রেখে বিশ্বকে স্বাগত জানানো এবং বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে সৌদি আরবকে একটি প্রগতিশীল ও সম্মানজনক গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরা। দেশের ভাবমূর্তি আধুনিকীকরণের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে সতর্ক করেছে যে, কেউ যদি আইন অমান্য করে, তবে তাকে দ্রুত শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।