এপ্রিল ২৬, ২০২৫

শনিবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

ছাত্র ইউনিয়নের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

Today is the 73rd founding anniversary of the Students' Union.

আজকে ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ইং, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বৃহত্তর কুমিল্লা সহ সারাদেশের ছাত্র ইউনিয়নের শুভানুধ্যায়ী/বন্ধু, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং খেটে খাওয়া সকল জনসাধারণকে জানাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিপ্লবী শুভেচ্ছা। শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি ছাত্র ইউনিয়নের লড়াকু সকল শহিদদের, যাদের রক্ত পতাকা হাতে আমরা চলছি অবিরাম; যাদের আত্নত্যাগে আমাদের গৌরব।

১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ থেকে জন্ম নেওয়া উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন বামপন্থী ছাত্র ও গণ সংগঠন। অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জন্মলগ্ন থেকেই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে খুবই কঠিন একটি পরিস্থিতি অতিবাহিত করছি আমরা। বৈষম্যমুক্ত সমাজ এখনো নির্মাণ হয়নি। শহিদদের স্বপ্নসাধ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এবং শোষণ-বৈষম্যহীন একটি অসাম্প্রদায়িক রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো।

বৈষম্যবিরোধীর কথা মুখে বললেই হয় না।অনেকেই বৈষম্য কি সেটাও ভালোভাবে বুঝে নাহ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ছাত্র ইউনিয়ন সেই ৫২’সাল থেকেই করে আসছে, শোষণ-বৈষম্যবিরোধী ও অসাম্প্রদায়িকতার আন্দোলনে চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে ছাত্র ইউনিয়ন।

শুনেছি আগেকার সময় একটা ছেলে বা মেয়ে যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটতো তখন আলাদা করা যেত যে এই ছেলেটা বা মেয়েটা সম্ভবত ছাত্র ইউনিয়ন করে। কিভাবে আলাদা করা যেত ওদের গায়ে তো লিখা থাকতো না যে ওরা ছাত্র ইউনিয়ন করে, ছাত্র ইউনিয়ন হচ্ছে অই মানের জায়গা চলাফেরা, চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, স্বচ্ছতা, সমাজ সচেতনতা, দেশপ্রেম ইত্যাদি। বুঝা যেত যে এই ছেলেটা বা মেয়েটা সমাজের সবচেয়ে প্রগতিশীল অংশের একটা অংশ ছাত্র ইউনিয়ন হলো শোষণহীন সমাজপ্রতিষ্ঠার ভ্যানগার্ড।১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাসের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার, সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত করার আহ্বান নিয়ে ১৯৫২’র ২৬ এপ্রিল গড়ে উঠে তৎকালীন ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন’।

শুরুতে সংগঠনের নাম পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন হলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পর স্বাধীন দেশে নামকরণ হয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং এদেশের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়ন অগ্রনায়কের ভূমিকা পালন করেছে।

আগামীদিনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বেই একটি শোষণ-বৈষম্যবিহীন, অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ তথা রাস্ট্র বির্নিমান হবে। কোথাও আঘাত ছাড়া, অগ্রসর সূর্যালোক নেই। ঐক্য, শিক্ষা, শান্তির স্লোগানে আনবোই প্রগতি ও সাম্য…. সামনে যুদ্ধ ঘোর, আনবো নতুন ভোর…. সেই ভোর আমাদের কাম্য।

ছাত্র ইউনিয়ন লড়তে জানে,
ইতিহাস গড়তে জানে।

সবাইকে আবারো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।

দীপ্ত দেবনাথ (অপূর্ব)

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়ন।

আরও পড়ুন