ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫

শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের ৪ লেনের প্রকল্প ঝুলে আছে প্রায় আড়াই বছর

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখর পর্যন্ত মহাসড়কটি সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে দ্রুত, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চার লেনের জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ প্রায় আড়াই বছর ধরে ঝুলে আছে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে  দ্বিগুণ। কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টের কয়েক কিলোমিটার চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ হবে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন থেকে উন্নীত হবে চার লেনে। এতে ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা এবং ভারতীয় ঋণ রয়েছে ২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

সওজ সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সড়কে গাছকাটা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের পটপরিবর্তনের পর এ প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেলে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে এ সড়কপথের বিভিন্ন বিভিন্নস্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

এতে হাজারো যানবাহন ও যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সওজের একাধিক সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের কাজ দেরিতে হলেও বন্ধ হবে না । এতে আড়াই বছর ধরে ঝুলে থাকা এ প্রকল্পটিও আশা জাগাচ্ছে।

এ বিষয়ে সড়কটি পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক সাংবাদিকদের জানান, ভারতীয় পক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে । বলা হয়েছে, তোমরা আসো, কাজ করো—আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব কাজ করো।

এ বিষয়ে সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা সাংবাদিকদের জানান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ঋণচুক্তির আওতায় এই মহাসড়ক চার লেন করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ করা গেলে দেশের পূর্ব-দক্ষিণ অংশের সঙ্গে উত্তর- পূর্ব অংশের যোগাযোগ সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার নজরে রয়েছে। জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সড়কটি দেখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আমাকে পাঠিয়েছেন। এই জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি মেরামত করার অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির প্রজেক্ট ম্যানেজার আশীষ মুখার্জী সাংবাদিকদের জানান, ভারত সরকার থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আমরা অপেক্ষায় আছি। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভারতে পাঠিয়েছি। বিষয়টি দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিষয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে। এ বছরের শেষ দিকে হয়তো আমাদের অর্থ ছাড় দেওয়া হতে পারে। প্রকল্পটি শেষ করতে সরকার আন্তরিক।