
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় এবার মোট পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৬০ শতাংশ। বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শামছুল আলম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, বোর্ডের আওতাধীন ছয়টি জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পাসের হারে সর্বোচ্চ স্থান অর্জন করেছে, অন্যদিকে চাঁদপুর জেলা রয়েছে সর্বনিম্ন অবস্থানে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. শামছুল আলম জানান, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী—এই ৬টি জেলার ১ হাজার ৭৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭২ জন পরীক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে ৭৯ হাজার ৭৩৪ জন মেয়ে এবং ৬৯ হাজার ৮৩৮ জন ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল। সর্বমোট ১ লাখ ৬ হাজার ৫৮১ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।
জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে মেয়েরা এগিয়ে:
এ বছর মোট ৯ হাজার ৯০২ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা ছেলেদের চেয়ে বেশি। ৫ হাজার ৪৯৫ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে, যেখানে ছেলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ৪০৭ জন। পরীক্ষা চলাকালীন বিভিন্ন কারণে ৪৮ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলেও জানানো হয়।
চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন, এ বছর ফেল করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই গণিতে খারাপ করেছে, যা সামগ্রিক ফলাফলে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে তিনি দাবি করেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরের পরীক্ষা গুণগত মানসম্পন্ন হয়েছে।
কুমিল্লা বোর্ড সূত্রে জেলাভিত্তিক পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি তথ্য অনুযায়ী:
১. ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ৬৯.২৪ শতাংশ পাসের হার নিয়ে কুমিল্লা বোর্ডের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেছে। এ জেলা থেকে ২৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৩ হাজার ৪৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল, যার মধ্যে ১৬ হাজার ২৫১ জন কৃতকার্য হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৫ জন।
২. ফেনী: ফেনী জেলা ৬৬.৬৯ শতাংশ পাসের হার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ফেনীর ১৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৬ হাজার ৪৪২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০ হাজার ৯৬৫ জন পাস করেছে। এ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ১২৫ জন।
৩. লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলায় পাসের হার ৬৫.৯৬ শতাংশ। এ জেলার ১৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ হাজার ৭৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ হাজার ৩৯৮ জন সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। লক্ষ্মীপুর থেকে ৮৫৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
৪. কুমিল্লা: ৬৫.০৭ শতাংশ পাসের হার নিয়ে কুমিল্লা জেলা চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এ জেলার ৬০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫৭ হাজার ৩৩১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৭ হাজার ৩০৮ জন পাস করেছে। কুমিল্লা জেলায় ৪ হাজার ২৮৫ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।
৫. নোয়াখালী: নোয়াখালী জেলায় পাসের হার ৫৯.৭৫ শতাংশ। নোয়াখালীর ৩০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২৯ হাজার ৯১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৭ হাজার ৮৭৬ জন কৃতকার্য হয়েছে। এ জেলা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯৪ জন।
৬. চাঁদপুর: কুমিল্লা বোর্ডের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার চাঁদপুর জেলায়, যা ৫৫.৯২ শতাংশ। চাঁদপুরের ২৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২৪ হাজার ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ১৩ হাজার ৭৮৩ জন পাস করেছে। এ জেলায় ১ হাজার ৬৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।