কুমিল্লার মেঘনা, গোমতী ও তিতাস এই তিন নদী নিয়ে নামকরণ করা সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘তিননদী পরিষদ’ ৪০ বছর ধরে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে। নগর উদ্যানের জামতলায় প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে ২১ দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি।
১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘তিননদী পরিষদ’ ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে আসছে। স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিল্পী, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাচ, গান, নাট্য, আবৃত্তি ও আলোচনায় একুশের চেতনা তুলে ধরে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল বলেন, “মাতৃভাষার প্রতি গভীর অনুরাগ থেকেই আমরা ‘তিননদী পরিষদ’ গঠন করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে মা, মাটি, দেশ, বাংলা ভাষা এবং একুশের আবেদনকে পৌঁছে দেওয়া।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দীন খান জম্পি বলেন, “ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তায় জন্ম নিয়েছিল একুশের চেতনা। এই চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনে আত্মত্যাগের বীজমন্ত্র। গত ৪০ বছর ধরে আমরা সবার মধ্যে স্বাধীনতা, ভাষা আন্দোলন এবং বাংলার ইতিহাসকে ছড়িয়ে দিচ্ছি এই মঞ্চ থেকে।”
কুমিল্লার বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শান্তি রঞ্জন ভৌমিক বলেন, “ভাষার গৌরব আর সংগ্রামের ইতিহাস জাগ্রত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে ‘তিননদী পরিষদ’। একুশকে বিকশিত করার জন্য সংগঠনটি কুমিল্লা অঞ্চলে বিরাট ভূমিকা রাখছে। তারা ভাষা আন্দোলনের গৌরবের ইতিহাসগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে গত ৪০ বছর ধরে পৌঁছে দিচ্ছে। এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। অমর একুশ নিয়ে একুশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ব্যতিক্রমই উদ্যোগ। আমার মনে হয় না দেশের আর কোথাও এ ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।”
‘তিননদী পরিষদ’র উদ্যোগে ২১ দিনব্যাপী একুশের অনুষ্ঠান দেশের অন্যতম ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। নবীন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের চেতনা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সংগঠনটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।