অবশেষে আভিজাত্যের নতুন ইতিহাস গড়ে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন অনন্ত-রাধিকা। গতকাল শুক্রবার ভারতের অন্যতম ধনী মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির বিয়ে হয়ে গেল। এই হাইভোল্টেজ বিয়ের অনুষ্ঠানে নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের। ৭ মাস ধরে চলছে বিয়ের এই অনুষ্ঠান।
এর আগে হলিউড-বলিউডের তারকা সমাবেশে দুইবার প্রাক্-বিবাহ অনুষ্ঠানও হয়ে গেছে। এবার চূড়ান্ত বিয়ের পালা ছিল।
শুক্রবার (১২ জুলাই) মুম্বাইয়ে ছিল বিয়ের আসর। মেগা এই আয়োজনে হাজির হয়েছেন বিশ্ব অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তিত্ব ও নামি-দামি তারকারা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এই বিয়েতে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে আম্বানি পরিবার। আম্বানিদের সম্পদের ০.০৫ শতাংশ খরচ হয়েছে এই বিয়েতে। মুকেশ আম্বানির সম্পদ একরকম আকাশছোঁয়া বলা যায়।
ফোর্বসের রিপোর্ট তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর মুকেশ আম্বানির মোট সম্পত্তির হিসাব দাঁড়িয়েছে ১০,১৮,৬১২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ধনকুবেরের কাছে ৫০০০ কোটি টাকা সামান্যই বলা যায়।
এদিকে অনন্ত-রাধিকার বিয়েতে নরেন্দ্র মোদি হাইপ্রোফাইল অতিথি হয়েছেন।
এছাড়া বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে, ঠাকরে পরিবার এবং দেবেন্দ্র ফড়নবিস, যাদের প্রত্যেককে আম্বানিরা ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং টনি ব্লেয়ার, পিটার ডায়মান্ডিস, শিল্পী জেফ কুনস, কোচ জে শেঠি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পারও আমন্ত্রণে ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি অ্যান্টিলিয়াতে ঘনিষ্ঠদের উপস্থিতিতে আংটি বদল করেন অনন্ত এবং রাধিকা। এরপর চলতি বছর মার্চে জামনগরে অনন্ত এবং রাধিকার জন্য তিন দিনব্যাপী একটি জমকালো প্রি-ওয়েডিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আম্বানি পরিবার। হাজির ছিলেন ভিভিআইপিরা। বিশেষ পারফরম্যান্স ছিল রিহানা এবং সির্ক দি সোলেইয়ের। এরপর জুনের শেষ দিকে ইতালিতে বিলাসবহুল এক যাত্রায় আয়োজিত হয় দ্বিতীয় প্রি-ওয়েডিং। যেখানে হাজির ছিলেন শাকিরার মতো পপতারকা। গত ৮ জুলাই সংগীব সন্ধ্যার আয়োজনে মঞ্চ মাতিয়ে গেছেন জাস্টিন বিবার।
অনন্ত-রাধিকার প্রি-ওয়েডিং উদযাপনের আরেকটি বড় অংশ ছিল গণবিবাহর আয়োজন। সমাজের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানি নভি মুম্বাইয়ে একটি গণবিবাহের আয়োজন করেছিলেন। সমাজের প্রায় সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত পরিবারগুলি থেকে আসা ৫০ জোড়া ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়েছে ওই অনুষ্ঠানে। নবদম্পতিদের জন্য উপহারের তালিকায় ছিল সোনার গয়না যেমন নাকছাবি, বিয়ের আংটি, মঙ্গলসূত্র। সেই সঙ্গে ছিল রুপোর পায়ের আংটি এবং নূপুরও। এই গণবিবাহের সাক্ষী থাকতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ৮০০ মানুষ। নতুন কনেদের প্রত্যেককে স্ত্রীধন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১.০১ লক্ষ টাকাও।
তবে এখানেই শেষ নয়, নবদম্পতিদের নতুন সংসারের জন্য মুদিখানার সামগ্রী এবং ঘরকন্নার সামগ্রীও উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। উপহারের তালিকায় ছিল অ্যাপলায়েন্সও। এই বিবাহের পরে অতিথিদের জন্য এলাহি খানাপিনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল পশ্চিম ভারতের আদিবাসী ওয়ারলি উপজাতির ঐতিহ্যবাহী তরপা নাচের আয়োজনও। এছাড়া গত ৪০ দিন ধরে চলছে ভান্ডারা সেবা। যেখানে প্রতিদিন ৯ হাজার মানুষ বিনামুল্যে খাবার পাচ্ছেন। ১৫ জুলাই পর্যন্ত থাকবে এই সেবা।