কুমিল্লায় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের রাজস্ব বিভাগের সাবেক উপব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আবদুল হাই ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমের বিরুদ্ধে এক কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৩ জুন) দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক রাজস্ব বিভাগের উপব্যবস্থাপক আব্দুল হাই ভূঁইয়া (৬২)। স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম (৫৬)। এই দম্পতি বরুড়া উপজেলার আমড়াতলী বড়ভাতুয়া এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আঞ্জুমান আরা বেগম একজন গৃহিণী এবং তার স্বামী আব্দুল হাই ভূঁইয়া বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কুমিল্লায় উপব্যবস্থাপক হিসেবে রাজস্ব বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমের নামে মোট ২ কোটি ৫৬ লাখ ৩৬ হাজার ১৪০ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। আঞ্জুমান আরা বেগমের আয়কর নথি অনুযায়ী তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ৩৫ লাখ ৫ হাজার ৭৯৩ টাকা। সবমিলিয়ে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৯১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা। যার মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪০ টাকা। অর্থাৎ আঞ্জুমান আরা বেগম ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
অন্যদিকে আঞ্জুমান আরার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী ফরমের স্থাবর অংশে ৬ শতাংশ জমিতে চার তলা ভবন রয়েছে, যা তার মায়ের কাছ থেকে হেবা সূত্রে পেয়েছেন। যদিও সম্পদ বিবরণী ফরমে ওই বাড়ি নির্মাণ ব্যয় উল্লেখ করেননি। কিন্তু নিরপেক্ষ প্রকৌশলী টিম বাড়িটি পরিমাপ করে ভবনের নির্মাণ ব্যয় পায় এক কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর অস্থাবর অংশে মোট ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৫২ টাকার কথা উল্লেখ করলেও অনুসন্ধানকালে মোট ৮৩ লাখ ৬১ হাজার ৫২ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ ৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। সম্পদ-অস্থাবর মিলিয়ে এক কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন তিনি।
আসামি আঞ্জুমান আরা বেগম তার স্বামী আব্দুল হাই ভূঁইয়ার সহায়তায় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। যে কারণে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।